বলিউডের ফ্যামিলি লাভার, সময় সচেতন এবং গত এক দশকে বলিউডে বক্স অফিসের অন্যতম চালক বলিউডের ‘খিলাড়ি’ অক্ষয় কুমার। শাহরুখ-আমির-সালমান—তিন খান বছরে একটি ছবি শেষ করতেও হিমশিম খাচ্ছেন, সেখানে নিয়মিত বিরতিতে তার চলচ্চিত্র বলিউডকে সচল রাখতে বড় ভূমিকা রাখছে অক্ষয় কুমার । সিনেমা হল খুলে গেলে মুক্তি পাবে অক্ষয়ের বেশ কয়েকটি ছবি। কাজের ধারাবাহিকতাকে খুব যে একটা মূল্যায়ন করা হয় তেমনটা নয়।
কিন্তু এ মহামারীকালে বলিউডের জন্য বৈশিষ্ট্যটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আর সঙ্গে অক্ষয়ও। নিজের ভারতীয় পাসপোর্ট না থাকলেও কাজের মাধ্যমে এ-বিষয়ক সমালোচনা রুখে দিয়েছেন তিনি। কৌশলে সফলভাবে নিজেকে জড়িয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন উদ্যোগে।
অক্ষয় কুমার নিজের ক্যারিয়ারে বেশ কয়েকবারই বাঁক বদল করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। নিজেকে নতুন করে চিনিয়েছেন। ১৯৯৯ সালে তনুজা চন্দ্রের সঙ্গে সংঘর্ষ ও সুনীল দর্শনের সঙ্গে জানোয়ার ছবি দুটো অক্ষয়ের ক্যারিয়ারে বড় পরিবর্তন নিয়ে আসে। এরপর ২০০০ সালে প্রিয়দর্শনের হেরা ফেরিতে জমজমাট কমেডি। ২০১৬ সালে রুস্তমের জন্য পান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। একই বছর মুক্তি পায় এয়ারলিফট এবং এ সময়ে এসে অভিনেতা হিসেবেও অক্ষয় কুমার প্রতিষ্ঠিত।
কর্মক্ষেত্রে যে অক্ষয় দারুণ শৃঙ্খলাপরায়ণ মানুষ, সে খবর হয়তো সবারই জানা। রোজ ভোর ৫টায় ঘুম ভাঙে তার। বেশির ভাগ দিন ঘুমাতে যান রাত সাড়ে ১০টায়। বছরের পর বছর ধরে এমন শৃঙ্খলা ফল দিয়েছে। নিজের চারপাশে একটা মিনি-ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করে ফেলেছেন তিনি। বছরে তিনি বলিউডকে উপহার দিচ্ছেন গড়ে চারটি ছবি। ভারতে লকডাউনের মধ্যেই তিনি প্রথম অভিনেতা হিসেবে পুরো টিম নিয়ে বিদেশে উড়ে গেছেন তার বেলবটম ছবির শুটিংয়ের জন্য। ১৯ আগস্ট ছবিটি মুক্তি পেয়েছে।
শনিবার পর্যন্ত প্রথম তিনদিনে ছবিটি আয় করেছে ৮ কোটি ৩৫ লাখ রুপি। শুরুতে একটু ঢিলেঢালা ভাব থাকলে তৃতীয় দিন মানে শনিবার আয় বেড়েছে ২০ শতাংশ। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ধীরে ধীরে বেলবটমের আয় বাড়তে থাকবে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন হল বন্ধ থাকায় শুরুতে বক্সঅফিস আয়ে এমন ধীরগতি দেখা গেছে।
সামনে অক্ষয়ের আরো কয়েকটি ছবি মুক্তি পাবে—রোহিত শেঠির পরিচালনায় সূর্যবংশী, চন্দ্রপ্রকাশের পৃথ্বীরাজ চৌহান, আনন্দ এল রায়ের আতরাঙ্গি রে ও রক্ষা বন্ধন, অভিষেক শর্মার রাম সেতু ও ফরহাদ সামজির বচ্চন পান্ডে।
অক্ষয়ের নাম একসময় ছিল খিলাড়ি কুমার। নায়িকাদের সঙ্গে পর্দায় ধৈর্য ধরে প্রেম করার ক্ষমতাই তাকে এমন নাম দিয়েছিল। সেই অক্ষয় এখন বলিউডের গুরুত্বপূর্ণ এক স্তম্ভ। একসময় ব্যাংককে চাচার রেস্তোরাঁয় রান্না করতেন, এখন বলিউডের একটা বড় অংশ ধারণ করেন। তিন দশক ধরেই বলিউডের গাড়ির গুরুত্বপূর্ণ একটা চাকা তিনি।