আহলান সাহলালন মাহে রমজান, খোশ আমদেদ মাহে রমজান, মাহে রমজান এর মুসলিম জাতির জন্য রহমত হিসেবে উপস্থিত হয়েছে। রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করতে দিনের বেলা হোটেল রেস্তোরাঁ দিনের বেলা বন্ধ রাখতে আহবান জানিয়েছেন বিভিন্ন সংগঠন।
রমজানুল মোবারক কে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ১০ দিন রহমত,পরের ১০ দিন মাখফেরাত, বাকী ১০ দশ দিন নাজাত থেকে মুক্তি পাওয়া। এই সময়ে আল্লাহর অফুরন্ত রহমত বর্ষিত হতে থাকে। আমাদের অস্তিত্ব জুড়ে আল্লাহর রহমত। রহমত ছাড়া এক মুহূর্তও বাঁচার উপায় নেই। তবে পবিত্র রমজানের প্রথম দশকে রহমতের বারিধারা আরও প্রবল বেগে বইতে থাকে। এতে সিক্ত হয়ে মুমিন বান্দারা পরকালে সুউচ্চ আসনে আসীন হতে পারেন। রাসূল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের সামনে রমজান মাস হাজির। এটি অত্যন্ত বরকতপূর্ণ মাস। এ মাসের রোজা আল্লাহ তোমাদের ওপর ফরজ করেছেন। এ মাসে রহমতের দরজাগুলো উন্মুক্ত হয়ে যায়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং বড় বড় শয়তানকে আটক করে রাখা হয়। এ মাসে এমন একটি রাত আছে, যা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। যে লোক এই রাতের মহাকল্যাণ লাভ থেকে বঞ্চিত থাকল, সে প্রকৃতই সবকিছু থেকে বঞ্চিত ব্যক্তি।’
মানব ও কল্যাণের মাস মাহে রমজানে বেশি বেশি পবিত্র কোরআন শরীফের তোলাওয়াত, আল্লাহর জিকির, দোয়া-দরুদ শরীফ পাঠ, তওবা-ইস্তেগফার ও প্রার্থনার মাধ্যমে আল্লাহর রহমতের ভাগিদার হওয়া যায়। রমজান মাসের প্রতিটি মুহূর্ত মহান আল্লাহর বিশেষ রহমতে পরিপূর্ণ। রোজা পালনের মধ্য দিয়ে মুমিন বান্দারা আত্মিকভাবে নিজেদের গড়ে তুলতে সক্ষম হন। তাই আল্লাহতায়ালা রোজাদারদের জন্য পবিত্র রমজান মাসে তার রহমতের দরজা অবারিত করে দেন। রমজানে রোজাদার আল্লাহর কাছে যত চাইবে, আল্লাহ ততই দেবেন। যে বান্দা আল্লাহর কাছে চায়, আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট হন। আর যে চায় না, তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন। আল্লাহর কাছে চাওয়ার ক্ষেত্রে কখনও কুণ্ঠিত হওয়া উচিত নয়।
আমরা প্রত্যেকেই আল্লাহর রহমতের মুখাপেক্ষী। প্রতিটি মুহূর্তে আমাদের রহমতের প্রয়োজন পড়ে। আল্লাহর রহমত কারও অনুকূলে না থাকলে জীবনে ধ্বংস অনিবার্য। যারা দুনিয়াতে সফল হয়েছেন, সবাই আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমতপ্রাপ্ত। রমজান আমাদেরকে আল্লাহর রহমত লাভের অনন্য সুযোগ করে দিয়েছে। এই দশকে আমরা বেশি বেশি করে তওবা, ইস্তেগফার ও দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারি। আমরা আল্লাহর দিকে যত দ্রুত এগিয়ে যাব, আল্লাহ এর চেয়ে শতগুণ বেশি বেগে আমাদের দিকে ছুটে আসবেন। আল্লাহর রহমতও এমনই। যারা গোলামির মাধ্যমে আল্লাহকে রাজি-খুশি করতে পারবে; দুনিয়া-আখেরাতে আল্লাহর রহমত তাদের সঙ্গী হবে। আর কারও জীবনে আল্লাহর রহমতের বারিধারায় সিক্ত হওয়ার সুযোগ হলে এর চেয়ে সৌভাগ্যবান আর কিছু নেই। রমজানে এই সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও যারা কাজে লাগাতে পারবে না তারা বড়ই হতভাগা।তাদের এই হতভাগ্য নিয়ে আল্লাহ ও রাসূল (সা.) আক্ষেপ করেছেন।
হাদিসে আছে, যে রমজানে তার গোনাহ ক্ষমা করাতে পারল না তার চেয়ে হতভাগা আর নেই। আমরা অনেকেই হেলায়-খেলায় রমজানের সময়গুলো কাটিয়ে পরবর্তী সময়ে আফসোস করি। সে আফসোসের কোনো ফল হয় না।
রমজান মাত্র শুরু হয়েছে। আল্লাহকে পাওয়ার সাধনা পুরোদমে শুরু করতে হবে এখন থেকেই।
যথাযথ হক আদায় করে রোজা পালন করব এই প্রতিজ্ঞার মাধ্যমে শুরু হোক আমাদের রমজান। এতে পরে আমাদের আর আফসোস করতে হবে না। আমরা হতভাগাদের অন্তর্ভুক্ত হবো না।
সমগ্র বিশ্বের বনি আদম সন্তান রমজান মাসের হেদায়েত লাভ করে ঈমান ইসলাম অর্জন করুক।
হাদিসে উল্লেখ আছে, রমজানে এক টাকা দান করলে ৭০ টাকার নেকি পাওয়া যায়। তাই আমরা রমজানে বেশি বেশি করে দান করবো,সদকা আদায় করবো,াকাত ফিতারা দিবো।
সমগ্র বিশ্বের মুসলিম মিল্লাত রমজান মাসে নিজের জীবন কে পরিশুদ্ধ করে দ্বীন দুনিয়ার সুখ সমৃদ্ধি লাভ করুক। মাহে রমজান এর রহমত আমাদের মানব সমাজের মধ্যে একটা দৃষ্টান্ত হিসাবে বেহেস্তের চাবি হয়ে থাকুক এটাই আমার কামনা,আমিন।