দেশের শীর্ষ দুই নাট্য সংগঠন ঢাকা থিয়েটার ও আরণ্যক জানিয়েছে সরকারের বিশেষ প্রণোদনা না পেলে নাট্য প্রদর্শনী করবে না।
আগামী শুক্রবার শিল্পকলার জাতীয় নাট্যশালায় নাটকের প্রদর্শনী করার জন্য এ দুটো সংগঠনকে মিলনায়তন বরাদ্দ দিয়েছিল জাতীয় নাট্যশালার মিলনায়তন বরাদ্দ কমিটি। সোমবার নাটকের এই সংগঠন দুটো থেকে মিলনায়তন বরাদ্দ কমিটিকে জানানো হয়েছে, সকল সাংস্কৃতিক সংগঠনের জন্য আগামী এক বছর শিল্পকলার সকল মিলনায়তনের ভাড়া মওকুফ করতে হবে। পাশাপাশি সাংস্কৃতিক সংগঠনকে বিশেষ প্রণোদনা দিতে হবে। তা না হলে মিলনায়তন ভাড়া নিয়ে নাট্য প্রদর্শনী করবে না সংগঠন দুটি।
সংগঠন দুটোর এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক কামাল বায়েজীদ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, বিশেষ প্রণোদনার বিষয়টি নিয়ে সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতেও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর সাথে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, প্রণোদনার বিষয়টি বিবেচনা করবেন। এ বিষয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা আসার আগ পর্যন্ত ঢাকা থিয়েটার ও আরণ্যক নাট্য প্রদর্শনী করবে না বলে জানিয়েছে। এটা দারুণ একটা প্রতিবাদ। অপরাপর সংস্কৃতি সংগঠনগুলোর জন্যও এই সিদ্ধান্তটি ফলপ্রসূ হবে বলে আমরা মনে করি।
এ বিষয়ে ঢাকা থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বলেন, আমরা একটি লিখিত আবেদন পাঠিয়েছি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে। সোমবার সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর সাথে আমাদের মামুনুর রশীদের কথা হয়েছে টেলিফোনে, এবং গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামাল বায়েজীদের সাথেও কথা হয়েছে। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত ইতিবাচক বলে আমরা জেনেছি। তিনি মনে করেন, এই প্রণোদনা আমাদের সংস্কৃতি কর্মীদের পাওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, ‘তবে হল ভাড়া মওকুফ করার সুযোগ তাদের নেই। তারা হয়তো যেটা করতে পারেন, আবেদনেও আমরা এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েছি যে, আমরা চাই প্রণোদনা আপনারা দেন, যা থেকে আমরা হল ভাড়া মেটাতে পারবো, এবং একইসাথে প্রযোজনারও কিছু খরচ মেটাতো পারবো। মঞ্চায়নের দিন যে খরচ হয়, সেটিতে সহযোগিতা করার কথা উল্লেখ করেছি। সারা দেশের সংস্কৃতি কর্মীদের সংগঠনের জন্য করোনা প্রণোদনা চেয়েছি।’
সংস্কৃতি কর্মীদের বিশেষ প্রণোদনা দিতে সরকারের এমন অবহেলায় ব্যথিত বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামাল বায়েজিদ। তিনি বলেন, সংস্কৃতি চর্চা না হলে সমাজ বিকলাঙ্গ অবস্থায় রূপ নেয়। একমাত্র সংস্কৃতি চর্চা-ই পারে, সমাজকে সুস্থ ও স্বাভাবিকতার দিকে নিয়ে যেতে। অথচ সংস্কৃতি খাতকেই সরকার বেশি অবহেলা করছে। মহামারীর কারণে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে সারা দেশের সংস্কৃতি কর্মীরা। গত দেড় বছরে সরঞ্জামাদিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অথচ অন্যান্য সেক্টরের মতো এ ক্ষেত্রটিতে সরকারের বিশেষ নজর নেই।
‘সংস্কৃতি খাতে বিশেষ প্রণোদনা বাবদ যে অর্থ চাওয়া হয়েছে, সেটা সরকার চাইলেই দিতে পারে। আমরাও মনে করছি শিগগির এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের ইতিবাচক সিদ্ধান্তের কথা সবাইকে জানাতে পারবো’ এমই আশাবাদ ব্যক্ত করে এই সংগঠক দুটি।