খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় অন্যান্য ফল বাগানের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাইট্রাস জাতীয় ফল বারি-১ মাল্টার চাষ। উপজেলায় কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর ও উপজেলা হর্টিকালচারের সহযোগিতায় সরকারি ও বে-সরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ২১২ হেক্টর জায়গা বিস্তার করেছে বারি-১ মাল্টার আবাদ। এসব মাল্টা ৬০ থেকে ৭০ টাকা ধরে বাসায় থেকেই বিক্রিয় করেন কৃষক। বারি-১ মাল্টা চিনার সব থেকে সহজ উপায় হচ্ছে মাল্টার নিচে পয়সা আকৃতির গোলক থাকে। আর বারি-১ মাল্টার শতভাগ স্বজাত নিশ্চয়তা পয়সা আকৃতি দেখে চিনে থাকেন প্রন্তিক কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর এর তথ্য মতে লেবু জাতীয় সম্পসারণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির প্রকল্পের আওতায় ২০১৭ থেকে ২০১৮ সালে সরকারি সহায়তাধীন সুবিধা ভোগী ২৪০ জন প্রান্তিক কৃষক ও ব্যাক্তি উদ্যোগের সম্মলিত প্রচেষ্টায় উপজেলায় ৯৬ হেক্টর এবং ২০১৯ থেকে ২০২০ সালে সরকার কতৃক ৩০০ জন প্রান্তিক কৃষক ও ব্যাক্তি উদ্যোগে ১১৬ হেক্টর জায়গায় মাল্টা বাগান গড়ে তুলা হয়েছে। উপজেলায় গত ৪ বছরে উঁচুপাহাড় ও জমির পতিত জায়গায় সাইট্রাস জাতীয় ফল বাগান গড়ে উঠা পূর্বে দেখা যায়নি। এক সময় লিচু আর আম বাগান করার প্রতি মত্ত ছিলো পাহাড়ের প্রন্তিক কৃষকরা । পাল্টে গেছে উপজেলার বর্তমান ফল বাগান করার দৃশ্য, এদিকে আগ্রহ হারাচ্ছে লিচু উপাদানে। আম্ররুপালি আমের সাথে পাল্লাদিয়ে বেড়ে চলছে সাইট্রাস জাতীয় ফল বারি-১ মাল্টা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমঙ্কার বিশ্বাস বলেন,লেবু জাতীয় সম্পসারণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির প্রকল্পের আওতায় সরকারি ভাবে উপজেলা কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর থেকে সরকারি বেসরকারি ভাবে ২১২ হেক্টর জায়গায় করা হয়ছে মাল্টা আবাদ। উপজেলায় ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ছোট বড় প্রকল্পের আওতায় ৫৪০ জন প্রান্তিক কৃষকদের সরকারি সহায়তায় বারি-১ মাল্টা বাগান গড়ে তুলা দেওয়া হয়েছে। এদিকে বাগান থেকে কৃষকরা মাল্টা তুলে বাজারে বিক্রিয় করে পরিবারের চাহিদা মিটাচ্ছেন।
উপজেলা সদর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে খাগড়াছড়ি সড়কের পাশে ভৈরবামুখ নয়া পাড়া এলাকার কৃষক সু-মঙ্গল চাকমা(৫৫) জানান, ২০১৯ সালে হর্টিকালচার এর সহযোগীতায় কৃষি জমিতে ২২০ টি বারি-১ মাল্টা চারা রোপন করেছি।এ বছর প্রায় অর্ধেক মাল্টা গাছে ফলন এসেছে। জমির উর্বরতার কারনে রাসায়নিক ও কীটনাশক তেমন দিতে হয় না, জৈব স্যার ব্যবহারে মাল্টার ফলন ভাল হয়। বারি-১ মাল্টা দেখতে যেমন ভাল, তেমনই স্বসাদু। গ্রাপ্টিং করা চারা থেকে পরিচর্যার মাধ্যমে ৩ বছরে ভাল ফলন পাওয়া যায়।
এদিকে উপজেলার তারা বুনিয়া এলকার কৃষক ললেন্দ্র কুমার চাকমা(৫০) জানান, উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে আমার ৩০ শতাংশ জমিতে মাল্টার বাগান করার জন্য চারা, বিষ, কীটনাশক সহ যাবতীয় সহযোগিতা করেছেন।
আমার মাল্টা বাগান থেকে গত কয়েকবছর ধরে বারি-১ মাল্টা বিক্রিয় করে থাকি। বারি-১ মাল্টা চাহিদা ভাল, বাসা থেকে ক্রেতারা এসে ৬০ থেকে ৭০ টাকা ধরে কিনে নিয়ে যায়। বাজারে গিয়ে বিক্রিয়ের চিন্তা করতে হয় না।
উপজেলা হর্টিকালচার সেন্টারের কর্মকর্তা উদ্ভিদ তত্ত¡বিদ মোঃ মাসুম ভুঁইয়া জানান, হর্টিকালচার সেন্টার থেকে সরকারি ভাবে চারা, বীজ ও অন্যনো সহযোগীতা করা হয় কৃষকদের। সাইট্রাস জাতীয় ফল বারি-১ মাল্টা ফলের স্বজাত এবং শতভাগ নিশ্চিয়তা দিয়ে চারা সংগ্রহ করা হয়। কৃষকরা বিভিন্ন বেসরকারি নার্সারি থেকে চারা এবং বীজ সংগ্রহ করে থাকে যার ফলে অনেক সময় চারা ও বীজের জাত ঠিক না থাকায় বড় ধরনের লোকসান গুনতে হয় কৃষকদের। এসময় তিনি বলেন উপজেলা হর্টিকালচার সেন্টার থেকে সরকারি ভাবে ন্যার্যমূল্যে চারা বিক্রিয় করা হয়।