বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থী এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকরা মেডিকেল কলেজ হল রুমে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে তারা নওগাঁ মেডিকেল কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে মুক্তির মোড় শহিদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে শিক্ষার্থীরা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তারা মেডিকেল কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, নওগাঁ মেডিকেল কলেজ কখনোই মানহীন হতে পারে না, নওগাঁ মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ফলাফল অন্যান্য মেডিকেল কলেজের থেকে অনেক ভালো। সরকার যে মানহীন আখ্যা দিয়ে মেডিকেল কলেজ বন্ধ করতে যাচ্ছে এটি হঠকারী সিদ্ধান্ত ছাড়া কিছুই না। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে।নওগাঁ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসন রাকিব বলেন, আমরা গত কয়েকদিন যাবত লক্ষ্য করছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মানহীন তকমা লাগিয়ে আমাদের এই মেডিকেল কলেজকে বন্ধ করে দিতে চাচ্ছে। নওগাঁ মেডিকেল কলেজ কখনোই মানহীন হতে পারে না। আমাদের এখানে শিক্ষার্থী অনুপাতে প্রতি ৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১ জন করে শিক্ষক রয়েছেন। আমার মনে হয়না এটি বাংলাদেশের আর কোনো মেডিকেল কলেজে আছে। এখানে যারা শিক্ষক আছেন তারা সকলেই উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন। রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যে পরীক্ষা হয় সেই পরীক্ষায় প্রথম স্থান এবং দ্বিতীয় স্থান নওগাঁ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরাই থাকে। মেডিকেল কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত সরকারের হঠকারিতা ছাড়া আর কিছুই না।
নওগাঁ মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নুসাইবা বিনতে হক বলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলছেন মানহীন মেডিকেল কলেজ, আসলেই মানহীনতার সংজ্ঞাটা কী? কোনো একটা মেডিকেলের ১০ তলা এসি ভবন থাকলেই কি আমরা সেটিকে মানযুক্ত মেডিকেল কলেজ বলবো? নাকি সেই মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের একাডেমিক রেজাল্টসহ অন্যান্য বিষয়ের ওপর সেটি নির্ধারণ করবো। নওগাঁ মেডিকেল কলেজের অবকাঠামোগত সংকট রয়েছে, কিন্তু একাডেমিক দিক থেকে অন্যান্য মেডিকেল কলেজের থেকে নওগাঁ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা অনেক এগিয়ে। গত ৭ বছরে আপনারা অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে পারেন নাই, এটি আপনাদের ব্যর্থতা, এর জন্য তো মেডিকেল কলেজ বন্ধ করে দিতে পারেন না। সরকার মেডিকেল কলেজ বন্ধের যে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে এটি যেন অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হয়।নওগাঁ মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. ফারহান সাদিক রওনক বলেন, একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে টারশিয়ারি লেভেল এবং সরকারি হাসপাতালগুলোকে সেকেন্ডারি লেভেলের হাসপাতাল ধরা হয়। টারশিয়ারি মেডিকেল কলেজে উন্নতমানের চিকিৎসকরাই থেকে থাকেন। ফলে রোগীরা সেখান থেকে উন্নতমানের চিকিৎসা সেবা পেয়ে থাকেন। নওগাঁ মেডিকেল কলেজ বন্ধ হয়ে গেলে নওগাঁ সদর হাসপাতাল একটি সেকেন্ডারি হাসপাতালই থেকে যাবে। ফলে এই জেলার ৩০ লাখ লোকজন উন্নত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হবে।
উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ #
১৪-৩-২৫ ইং