নওগাঁর মহাদেবপুরে আবারো ছয় বছরের এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী চাচার বিরুদ্ধে।
ঘটনার তিন দিনেও অসুস্থ্য শিশুটির চিকিৎসা করাতে দেননি একজন মাতব্বর।
এমনকি থানা পুলিশের আশ্রয় নিতেও নিষেধ করেন তিনি। শেষে ওই মাতব্বর দুই লাখ টাকার চুক্তিতে বিষয়টি আপস করে দেন।
দেশের আলোচিত শিশু ধর্ষণের রেশ মহাদেবপুরের আনাচে কানাচেও ছড়িয়ে পড়ছে, এসবের উপযুক্ত বিচার না হলে ঘটনা আরো বেড়ে যাবে এই ভয়ে স্থানীয়রা আপসের বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না।
তারা অবিলম্বে শিশু ধর্ষণকারি ও শালিস অযোগ্য বিষয় আপস করায় কথিত মাতব্বরের শাস্তি দাবি করেন।
সরেজমিনে উপজেলার সফাপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ গোবিন্দপুর গ্রামে গিয়ে বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। নির্যাতিত শিশুর পরিবারের সদস্যরা জানান, তিন দিন আগে চুরি-মালা দেয়ার প্রলোভন দিয়ে
প্রতিবন্ধী দম্পতির শিশুটিকে প্রতিবেসী চাচা ওই গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে হারুন অর রশিদ (৫০) তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য শিশুটিকে ভয় দেখানো হয়। পরে শিশুটির গোপনাঙ্গে প্রচন্ড যন্ত্রণা হতে থাকলে সে বিষয়টি তার মাকে জানায়। তার মা ওই ওয়ার্ডের মেম্বার আমজাদ হোসেনের কাছে বিচার চাইলে আমজাদ হোসেন উপযুক্ত বিচারের আশ্বাস দিয়ে
থানা পুলিশকে জানাতে নিষেধ করেন। এমনকি উপজেলা সদরে গিয়ে শিশুটির চিকিৎসা করাতে চাইলেও মেম্বার নিষেধ করেন। শনিবার (২২ মার্চ) রাতে এব্যাপারে একটি গোপন বৈঠকে আমজাদ মেম্বার ধর্ষক হারুন অর রশিদের দুই লাখ টাকা জরমানা করেন। জরিমানার অর্ধেক টাকা শিশুটির পরিবারকে দেয়া হয়।
টাকা দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তাদের পুরো পরিবারকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয় ওই মেম্বার।
রোববার বিকেলে ওই গ্রামে গিয়ে অভিযুক্ত হারুন অর রশিদকে পাওয়া যায়নি। তার স্ত্রী জানান, পারিবারিক ঝামেলা হয়েছিল। মিমাংসা হয়েছে। হারুনের ভাতিজা আরিফুল ইসলাম জানান, তার চাচা তাকে জানিয়েছেন যে, ঘটনা এতখানি না। ছোট বাচ্চা তো, তাকে ধর্ষণ করলে বাঁচতো না। খেলার ছলে তাকে তিনি এটা সেটা দিয়েছেন। কিন্তু বাচ্চাটি অন্যভাবে বলে দিয়েছে।
কথিত মাতব্বর সফাপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আওয়ামী লীগ নেতা আমজাদ হোসেন বিষয়টি মিমাংসা করার কথা অস্বীকার করেন। মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহীন রেজা জানান, এবিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিবেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ মার্চ উপজেলার এনায়েতপুরে এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে থানা পুলিশ ১০ মার্চ আমিনুল হোসেন (৫০) নামে একজনকে আটক করে।
উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ #