নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার কৃষকেরা এবার ভুট্টার বাম্পার ফলনের আশা করছেন । গত বছর যেসব জমিতে ধানের আবাদ হতো, সেসব জমিতে এখন দেখা যাচ্ছে ভুট্টার চাষাবাদ। তবে ভুট্টার পাশাপাশি গোমের চষাবাদ করাও দরকার বলে মনে করেন একাধিক ব্যাক্তি।
উৎপাদন খরচ কম, দাম ভালো ও চাহিদা বেশি থাকায় দিন দিন ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে এলাকার কৃষকদের। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানিয়েছে, উপজেলার ১০ ইউনিয়নে ফসলী মাঠে চলতি মৌসুমে চাষকৃত পদ্ধতিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিল ২ হাজার ৭৫ হেক্টর জমিতে। তবে এবারে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে রেকর্ড পরিমাণে জমিতে ভূট্রা চাষ হয়েছে।
এ অঞ্চলে সাধারণত ডিভরি -৫৪৫৫, ডিভরি -৫২ বীর- ২৩৫৫, পদ্না -৫৫, পাওনিয়ার -৩৩৫৫, ধামাকা -৫৫, টাইগার -৫৫৫, সিবাম -২৩৯, ডালিয়া ৪৪৫৫, পাতেমা -৩৪৫৫, বালুবালী -৫৫৫, মুক্তা- ৩৫৫, ইস্পাহানি লাকি -৭ বিজয় -৭১ সম্পদ- ৫৫ গঙ্গা -৫৫, এ জাতের ভুট্টা বেশি চাষ হয়ে থাকে। ভুট্টা আবাদে তুলনামূলক খরচ অনেক কম এবং লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকদের ভুট্টা চাষে আগ্রহ বেড়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার ফলন লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি আশা করছেন কৃষকেরা। উপজেলার নাউতারা, গয়াবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, ঝুনাগাছ চাপানী, বালাপাড়া, ও খালিশা চাপানীসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় মাঠকে মাঠ ভুট্টার আবাদ।
এদিকে নাউতারা ইউনিয়নে আকাশকুড়ি গ্রামের ভূট্রাচাষি মোঃ রফিকুল ইসলাম কালু, গয়াবাড়ী ইউনিয়নের দুলাল হোসেন, টেপাখড়িবাড়ির নাসির উদ্দীন, ডিমলা সদর ইউনিয়ন এর ভূট্রাচাষি বাদশা প্রমানিকসহ অনেকের সাথে কথা হলে তারা জানান, এবার তারা কয়েক বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও ভুট্টার বাম্পার ফলন হবে বলে জানান। তারা আরো বলেন, বিভিন্ন এলাকায় এখন আগের চেয়ে ভুট্টার আবাদ বেশি হচ্ছে। উপজেলায় কিছু এলাকা নিচু হওয়া সত্তেও এবার ভুট্টার চাষাবাদ করা হয়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশি বলে জানান।
ভূট্রাচাষি ফরিদুল জানান, গত বছর আমি বোরো ধান চাষ করে অল্প জমিতে ভূট্রা চাষ করেছি, কম খরচে, অল্প পরিশ্রমে আশানুরূপ ফলন ও ভাল দাম পেয়েছি। এবছরে অল্প জমিতে ধানচাষ করে সম্পূর্ণ জমিতে ভূট্রা চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে গতবারের চেয়ে এবার বেশি ফলন পাব ইনশাআল্লাহ।
ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মীর হাসান আল বান্না জানান, এ বছর ডিমলা উপজেলায় ভুট্টার চাষ অনেকটাই বেশি হয়েছে।রোগ-বালাই দমনে কৃষি বিভাগের লোকজন সার্বক্ষণিক কৃষকের পাশে থেকে পরামর্শ দিয়ে আসছেন। আবহাওয়া ভাল থাকলে ভুট্টার ফলন ভাল হবে। এছাড়া গবাদিপশুর খাদ্য, বয়লার মুরগি ও মাছের ফিড তৈরীতে ভূট্রার চাহিদা অনেক রয়েছে। দেশে বিভিন্ন কোম্পানিগুলোতে ভূট্রার চাহিদা প্রচুর থাকায় কৃষকেরা ন্যার্য দামও পাবে। এতে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে আর্থিক সচ্ছলতা ফিরে পাবে। ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে।