Crime News tv 24
ঢাকারবিবার , ৩০ মার্চ ২০২৫
  1. অন্যন্য
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. খেলা
  5. জাতীয়
  6. দেশজুড়ে
  7. ধর্ম
  8. ফিচার
  9. বাংলাদেশ
  10. বিনোদন
  11. মতামত
  12. রাজনীতি
  13. রান্না
  14. রাশিফল
  15. লাইফস্টাইল
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গাছতলা ঈদগাহ ময়দানে ধারাবাহিকতা বজায় রাখছে বাগাদী দরবার শরীফ

স্টাফ রিপোর্টার।।
মার্চ ৩০, ২০২৫ ১২:৫৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নে চৌরাস্তা বাজারের পাশেই নিজগাছতলা গ্রামে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী বাগাদী দরবার শরীফের পীর সাহেব হুজুরের প্রতিষ্ঠিত নিজগাছতলায় পীর আলহাজ্ব সালামত উল্যাহ খান (রহ:) কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে শতাধিক বছর ধরে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
এটি জেলার অন্যতম বৃহত্তর ঈদগাহ ময়দান। এ ঈদগাহ ময়দান শুধু একটি নামাজের স্থান নয় এটি ধর্মীয়, ঐতিহ্যগত এবং সামাজিক বন্ধনের এক অনন্য প্রতীক। প্রতিবছর এই ঈদগাহ ময়দানে ৭টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি ধর্মপ্রাণ মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করে থাকেন। যা ইসলামী ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
উপমহাদেশের অন্যতম আধ্যাত্মিক দরবারগুলোর মধ্যে বাগাদী দরবার শরীফ একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। জৈনপুর ও ফুরফুরা শরীফের খেলাফত প্রাপ্ত মূলধারার একটি শাখা। যা পীরে কামেল শাহ সুফি আলহাজ্ব মাওলানা সালামত উল্যাহ খান (রহ.)-এর হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয়। তার ইসলাম প্রচার ও ধর্মীয় শিক্ষার অবদান চাঁদপুর জেলাসহ আশপাশের অঞ্চলগুলোতে সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
শতাধিক বছর আগে এই দরবারের প্রতিষ্ঠাতা পীর আলহাজ্ব আল্লামা সালামত উল্যাহ খান (রহ.) ৭ গ্রামের মুসল্লিদের নিয়ে পীর আল্লামা সালামত উল্যাহ খান (রহ.) নিজ গাছতলায়
কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান প্রতিষ্ঠা করেন। এই ঈদগাহ মাঠ শুধু নামাজ আদায়ের স্থানই নয়।এটি ৭ গ্রামের মানুষের ধর্মীয় ঐক্য ও পারস্পরিক বন্ধনের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।এটি যেন এক আলোকবর্তিকা, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ইসলামের পথে আলোকিত করে আসছে।
বংশ পরম্পরায় এই ঈদগাহ ময়দানে ইমামতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন দরবার শরীফের পীর সাহেবগণ। এটি যেন এক প্রবাহমান নদীর মতো।যেখানে ধর্মীয় জ্ঞানের ধারাবাহিক স্রোত কখনো থেমে যায় না।
পীরে কামেল শাহ সুফি আলহাজ্ব আল্লামা ছালামত উল্যাহ খান (রহ:) ও তার সাহেবজাদাগন পীরে কামেল শাহ সুফি আল্লামা ছায়াদ উল্যাহ খান বড় হুজুর (রহ:), পীরে কামেল আলহাজ্ব আল্লামা হেদায়াত উল্যাহ খান (রহ:) মেজো হুজুর , পীরে কামেল আলহাজ্ব মাওলানা নজীব উল্যাহ খান (রহ:) সেজো হুজুর যিনি দীর্ঘ কাল ধরে ইমামতি করেছেন। ছোট হুজুর পীরে কামেল আলহাজ্ব মাওলানা ছফি উল্যাহ খান (রহ:) তার পরবর্তীকালে হুজুরের নাতি পীরে কামেল আলহাজ্ব মাওলানা এ কে এম নেয়ামত উল্যাহ খান ও পীরে কামেল শাহ সুফি আলহাজ্ব আল্লামা আরিফ উল্যাহ খান (রহ:) এই ঈদগাহে ঈদের নামাজের ইমামতি করেন।
ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে শতাব্দীর প্রাচীন এই ঈদগাহ ময়দানে এবছর ঈদের প্রধান জামাতের ইমামতি করবেন মরহুম পীরে কামেল আলহাজ্ব আল্লামা আরিফ উল্যাহ খান (রহ:) পীর সাহেব হুজুরের বড় সাহেবজাদা ও খলিফা বাগাদী দরবার শরীফের দায়িত্বশীল পীরজাদা আলহাজ্ব আল্লামা আশেকুল আরেফিন সিদ্দিকী।
ঈদ উপলক্ষে বাগাদী দরবার শরীফ থেকে বিশেষ ঈদ মিছিল বের করা হয়। যেখানে হাজারো মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এই মিছিল যেন এক আনন্দের ঢেউ।যা ধর্মীয় চেতনার সাগরে বিস্তৃত হয়ে পড়ে।
দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা পীর সাহেবের সময় থেকে চলে আসা এই মিছিল এখনো অব্যাহত রয়েছে। এটি কেবল আনন্দ উদযাপনের একটি অংশই নয় বরং ভ্রাতৃত্ব, সংহতি ও ইসলামী মূল্যবোধের প্রচারের একটি শক্তিশালী মাধ্যম।
ঈদ মিছিলটি সাধারণত দরবার শরীফ থেকে শুরু হয়ে ঈদগাহ ময়দানের দিকে অগ্রসর হয়। এসময় মুসল্লিরা তাকবির, তাহলিল ও ইসলামী স্লোগানে মুখরিত করে তোলেন । পুরো এলাকা যেন এক সুরম্য ইসলামী মেলায় পরিণত হয়। যেখানে ধর্মীয় ভক্তি আর আনন্দ একসঙ্গে মিলেমিশে যায়।
বাগাদী দরবার শরীফের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন চাঁদপুরের মাননীয় জেলা প্রশাসক। এছাড়াও এবছর কার্যকরী কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক মিজানুর রহমান খান। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন বাগাদী দরবারের প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য ও শিল্পপতি আলহাজ্ব সাইফুল্লাহ খান নোমান।
৭ গ্রামের মুসল্লিদের নিয়ে গঠিত একটি শক্তিশালী পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে ঈদগাহ ময়দানের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে ।
এই ঈদগাহ ময়দান চাঁদপুর জেলার অন্যতম বৃহৎ ঈদগাহ হিসেবে পরিচিত। এটি যেন এক প্রশস্ত প্রান্তর। যেখানে হাজারো মানুষ এক কাতারে দাঁড়িয়ে আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন হন।
প্রতি বছর ঈদগাহে বিশেষ ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করা হয়। মুসল্লিদের সুবিধার্থে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত স্থান নির্ধারণ, নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ নজরদারি এবং দরবার শরীফের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয় নামাজিদের সহায়তা করার জন্য ।
ঈদগাহ ময়দানে ৭টি গ্রামের মুসলমানদের জন্য শুধু একটি নামাজের স্থান নয় এটি তাদের একতা, ঐক্য ও ইসলামী ভ্রাতৃত্বের মেলবন্ধন। এটি যেন এক বিশাল বৃক্ষ, যার ছায়ায় ৭ গ্রামের মানুষ পাশাপাশি আশপাশের মানুষ ও একত্রিত হয়ে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন গড়ে তোলে।
প্রতিবছর হাজারো মুসল্লির অংশগ্রহণে এটি এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। যা ইসলামের সৌন্দর্য ও ঐতিহ্যের একটি অনন্য দৃষ্টান্ত।
এই ঐতিহ্য যেন এক দীপশিখার মতো।যা শত বছর ধরে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এই আলো বহমান থাকবে। বাগাদী দরবার শরীফের এই ধর্মীয় ও সামাজিক অবদান যুগ যুগ ধরে মানুষের মাঝে ইসলামের সুমহান আদর্শ ছড়িয়ে দেবে।