হোয়াইট হাউজ সামিটে করোনা ভ্যাকসিনকে বৈশ্বিক জনসম্পদ হিসেবে ঘোষণা করতে আবারও আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো যাদের সক্ষমতা আছে তাদের করোনা টিকা উৎপাদনের অনুমতি দেওয়ার কথাও বলেন।
বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্ক সময় সকালে ‘হোয়াইট হাউস গ্লোবাল কোভিড-১৯ সামিট অনুষ্ঠানে (ভার্চ্যুয়াল) ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বৈশ্বিক টিকাদানে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনকে ‘বৈশ্বিক জনসম্পদ’ হিসেবে ঘোষণা করা প্রয়োজন। সার্বজনীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে যেসব দেশের টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা আছে তাদের অবশ্যই স্থানীয়ভাবে টিকা উৎপাদনের অনুমতি দিতে হবে।
কোভিড-১৯ মহামারি সংকট মোকাবিলা করে জীবন বাঁচানো, জীবিকায় সহায়তা এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশে ত্রিমাত্রিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথমে আমরা পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধা, সরঞ্জাম, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ বরাদ্দ করে মানুষের জীবন বাঁচানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেই। এরপর মানুষের জীবিকা নিশ্চিত করতে, বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেই এবং দ্রুত অর্থনীতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেই।
বাংলাদেশ ১৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, দরিদ্র, বৃদ্ধ, বিধবা, শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তি, বিভিন্ন সেক্টরে ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীসহ ৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন উপকারভোগীর মধ্যে ১৬৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সহায়তা বিতরণ করার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার ৩৫ মিলিয়নের বেশি মানুষকে টিকার আওতায় এনেছে বলে জানান শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালের আগস্ট মাসের মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা না দেওয়া পর্যন্ত আমরা প্রতি মাসে ২০ মিলিয়ন মানুষকে টিকাদানের পরিকল্পনা করছি।
আরও ভালোভাবে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যেতে বাংলাদেশ উন্নত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা এবং সামাজিক নিরাপত্তা নেট কর্মসূচির সঙ্গে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নীতি এই তিনটি বিষয়ে মনোনিবেশ করছে বলে জানিয়েন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া টেকসই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, উদ্ভাবন, কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের ওপর জোর দেওয়া এবং জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা এবং কম কার্বন নিঃসরণ প্রযুক্তির দিকে মনোনিবেশ করছে বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো, জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেসসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান।