দক্ষিণ ২৪পরগনা জেলার বারুইপুর থানার অন্তর্গত কুমারহাটেতে বারুইপুর ওয়াকফ বাঁচাও কমিটির ডাকে ওয়াকফ সংশোধনীর বিলের বাতিলের দাবিতে এবং ২৬শে এপ্রিল ব্রিগেড মহাসমাবেশের অংশগ্রহণ করার আহ্বানের বারুইপুর সূর্যপুর থেকে বারুইপুর কুমারহাট পর্যন্ত এক মহা মিছিলের এবং প্রতিবাদী সভা অনুষ্ঠিত হয়।এই মহামিছিলে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে বাচ্চা থেকে বড়, প্রায় ১০ হাজারের অধিক মানুষ কালো পতাকা, জাতীয় পতাকা ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ওয়াকফ বিলের প্রত্যাহারের দাবিতে স্লোগান দিতে শোনা যায় এই মহা মিছিলে । মিছিলের শেষে কুমারহাটে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।এই প্রতিবাদ সভার পরিপ্রেক্ষিতে সূদূর বারুইপুর কুলপী রোড় জানজোটের সৃষ্টি হয় । বারুইপুর থানার পুলিশ অক্রান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে জানজোট সমস্য সমাধান করেন। তেমনি আগামী ২৬শে এপ্রিল ব্রিগেডে মহাসমাবেশে প্রত্যেকটা বাড়ি থেকে সমস্ত মানুষকে বেরিয়ে এসে এই মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানালেন বারুইপুর ওয়াকফ বাঁচাও কমিটির পক্ষ থেকে। প্রতিবাদ সভায় মাওলানা জালাল উদ্দিন সাহেব বলেন,
জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ ভারতের মুসলিম পণ্ডিতদের একটি প্রধান সংগঠন। এটি ভারতীয় মুসলমানদের বৃহত্তম এবং প্রভাবশালী সংগঠন।যখন কোন মুসলমান তার স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি আল্লাহর নামে ধার্মিক, দাতব্য বা ধর্মীয় উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করে তখন তাকে ওয়াকফ বলা হয় এবং এ জাতীয় সম্পত্তিকে ওয়াকফ সম্পত্তি বলে।ওয়াকফ বোর্ড বর্তমানে ভারত জুড়ে 9.4 লক্ষ একর বিস্তৃত 8.7 লক্ষ সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণ করে যার আনুমানিক মূল্য 1.2 লক্ষ কোটি টাকা। বিশ্বের বৃহত্তম ওয়াকফ হোল্ডিং ভারতে রয়েছে। আরও, সশস্ত্র বাহিনী এবং ভারতীয় রেলওয়ের পরে ওয়াকফ বোর্ড ভারতের বৃহত্তম জমির মালিক।
আমাদের পূর্বপুরুষদের আল্লাহর নামে দান করা সম্পত্তি কোনভাবেই কেড়ে নিতে দেব না, ভারতীয় মুসলমানরা যেমন জীবন দিয়ে স্বাধীনতার সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছিল, ইংরেজদের তাড়াতে নিজেদের রক্তপাত করতে পিছপা হয়নি, ঠিক তেমনি এই ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষা করতে গিয়ে যদি নিজেদের জীবন বিসর্জন দিতে হয় তাতেও পিছপা হবেন না। সমাজসেবী শহিদুল হক বলেন, ওয়াকফ বোর্ডে যদি হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ থাকেন তাহলে মন্দির কমিটি গুলোতেও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ রাখা উচিত. মসজিদ মাদ্রাসা ও কবরস্থানের এই জায়গাগুলো বাঁচানোর জন্য সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ আমাদের পাশে আছে।
ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনায় সমস্যা এবং চ্যালেঞ্জগুলি সমাধানের জন্য ওয়াকফ অ্যাক্ট, 1995 সংশোধন করা হয়। ভারতের ওয়াকফে্র ইতিহাস দিল্লি সালতানাতের প্রথম দিকের দিনগুলিতে খুঁজে পাওয়া যায়। সুলতান মুইজুদ্দিন সাম ঘোর মুলতানের জামে মসজিদের পক্ষে দুটি গ্রাম উৎসর্গ করেছিলেন এবং এর প্রশাসন শাইখুল ইসলামের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। ভারতে দিল্লি সালতানাত এবং পরবর্তীতে ইসলামি রাজবংশের বিকাশের সাথে সাথে ভারতে ওয়াকফ্ সম্পত্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে।19 শতকের শেষের দিকে ভারতে ওয়াকফ্ বিলোপের জন্য একটি মামলা করা হয়েছিল । 1913 সালের মুসলিম ওয়াকফ বৈধকরণ আইন ভারতে ওয়াকফে্র প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করেছিল।ওয়াকফ্ অ্যাক্ট, 1954 - ওয়াকফ্ শুধুমাত্র স্বাধীনতা পরবর্তী শক্তিশালী হয়েছে। 1954 সালের ওয়াকফ্ আইনটি ওয়াকফে্র কেন্দ্রীকরণের দিকে একটি পথ প্রদান করে। সেন্ট্রাল ওয়াকফ্ কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া, একটি বিধিবদ্ধ সংস্থা 1964 সালে ভারত সরকার 1954 সালের এই ওয়াকফ্ আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই কেন্দ্রীয় সংস্থাটি বিভিন্ন রাজ্য ওয়াকফ্ বোর্ডের অধীনে কাজ তত্ত্বাবধান করে যা ওয়াকফের ধারা 9(1) এর বিধানের অধীনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আইন, 1954।
ওয়াকফ অ্যাক্টকে 1995 সালে মুসলমানদের জন্য আরও অনুকূল করা হয়েছিল, যা এটিকে একটি ওভার রাইডিং আইনে পরিণত করেছিল। ওয়াকফ অ্যাক্ট, 1995 ভারতে ওয়াকফ সম্পত্তির (ধর্মীয় এনডাউমেন্ট) প্রশাসন পরিচালনার জন্য প্রণীত হয়েছিল। এটি ওয়াকফ কাউন্সিল, রাজ্য ওয়াকফ বোর্ড এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার ক্ষমতা এবং কার্যাবলী এবং মুতাওয়াল্লির দায়িত্ব গুলির জন্য প্রদান করে।2013 সালে সংশোধনী - ওয়াকফ্ ব্যবস্থাপনাকে আরও দক্ষ ও স্বচ্ছ করতে 2013 সালে আইনের কিছু বিধান সংশোধন করা হয়েছিল।ওয়াকফ আইন, 1995 সংশোধিত হিসাবে 8 ডিসেম্বর রাজ্যসভায় পেশ করা হয়েছিল, 2023।
ওয়াকফের ক্ষেত্রে সম্পত্তির মালিকানা ওয়াক্ফ্ থেকে আল্লাহর কাছে হস্তান্তরিত হয় এবং আল্লাহর কাছ থেকে সম্পত্তি ফেরত নেওয়া যায় না, তাই একবার কোনো সম্পত্তি ওয়াকফ হয়ে গেলে তা সর্বদা ওয়াকফ্ থাকবে, এটি অপরিবর্তনীয় হয়ে যাবে। একবার কোনো সম্পত্তি ওয়াকফ ঘোষণা করা হলে তা চিরকালই থাকে। বেঙ্গালুরু ঈদগাহ মাঠ, 1850 সাল থেকে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসাবে দাবি করা হয়েছে। সুরাট মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন বিল্ডিং, মুঘল যুগে হজের সময় সারাই হিসাবে ঐতিহাসিক ব্যবহারের কারণে দাবি।
সব ইসলামী দেশে ওয়াকফ সম্পত্তি নেই। তুরস্ক, লিবিয়া, মিশর, সুদান, লেবানন, সিরিয়া, জর্ডান, তিউনিসিয়া এবং ইরাকের মতো ইসলামিক দেশগুলিতে ওয়াকফ নেই। ভারতে, ওয়াকফ বোর্ডগুলি শুধুমাত্র বৃহত্তম শহুরে জমির মালিক নয়, তাদের আইনগতভাবে তাদের রক্ষা করার জন্য একটি আইনও রয়েছে।ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে নিবন্ধিত 356, 051টি ওয়াকফ এস্টেট রয়েছে।
ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে নিবন্ধিত 872,328টি স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে।ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে নিবন্ধিত 16, 713টি অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে।ওয়াকফ্ বোর্ডের এখন পর্যন্ত 330000টি ডিজিটালাইজড রেকর্ড রয়েছে।মোকদ্দমা এবং অব্যবস্থাপনা: ওয়াকফ আইন, 1995 এবং এর 2013 সংশোধনী অকার্যকরতার জন্য সমালোচিত হয়েছে।
ওয়াকফ আইনের ধারা 40 ব্যাপকভাবে একটি সম্পত্তি অধিগ্রহণ এবং সম্পত্তি হিসাবে ঘোষণা করার জন্য অপব্যবহার করা হয়েছিল। এটি শুধুমাত্র বিপুল সংখ্যক মামলাই নয়, সম্প্রদায়ের মধ্যে বৈষম্যও সৃষ্টি করেছে।
ওয়াকফ্ আইন দেশের শুধুমাত্র একটি ধর্মের ধর্মীয় সম্পত্তির জন্য একটি বিশেষ আইন, যখন অন্য কোনো ধর্মের জন্য এই ধরনের কোনো আইন নেই।প্রস্তাবিত ওয়াকফ সংশোধনী বিল সহ একাধিক ইস্যুতে জমিয়তের মহা সমাবেশে স্তব্ধ গোটা শহর কলকাতা।
বৃহস্পতিবার প্রস্তাবিত ওয়াকফ্ সংশোধনী বিল প্রত্যাহার, প্যালেস্টাইনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি, ।
বারুইপুর ওয়াকফ বাঁচাও কমিটির ডাকে এবং ২৬ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য জমিয়তে উলামার হিন্দের ডাকার আহবানে ব্রিগেড মহা সমাবেশের সফলতার জন্য আজ বারুইপুর থানার কুলপী রোডের গোটা বারুইপুর শহর স্তব্ধ করে কেন্দ্রীয় সরকার কে বুঝিয়ে দিল ।এদিনের সভায় বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার ওয়াকফ বাঁচাও সমর্থকরা উপস্থিত হয়ে গোটা শহর বারুইপুর কে স্তব্ধ করে দেয়। সভাস্থল ও তার পার্শ্ববর্তী ময়দানে জায়গা না পেয়ে হাজার হাজার জমিয়েত হিন্দ সমার্থকদের ফিরে যেতে দেখতে পাওয়া যায়।
মুসলমানদের বাদ দিয়ে ভারতবর্ষ চলবেনা , চলবেনা,। পশ্চিমবঙ্গের তিন টি খুঁটি, তার মধ্যে মুসলমানরা একটি খুঁটি। আমরা হলাম বাংলার খুঁটি ।
কিছু পা চাটা গদি মিডিয়া আছে তারা দিন রাত মুসলমানদের কিভাবে জঙ্গি বানানো কিভাবে সাম্প্রতিকতা বানানো যায় সেই চেষ্টা করছে। কিন্তু যাদের টুপি মাথায় যাদের মুখে দাড়ি আছে যারা নামায আদায় করে এরা কোনদিন জঙ্গি হয়না,হযনা, কখনো হবেনা। তিনি বলেন যার আল্লাহ আছে তার সব আছে ।বারুইপুর ওয়াকফ বাঁচাও কমিটির পক্ষথেকে কেন্দ্রীয় সরকারের জানিয়ে দিতে চাই তুমি যতই খেলাই খেলো না আমরা ভারতবর্ষের হিন্দু মুসলমান বিশেষ করে বাংলার হিন্দু মুসলমানদের ঐক্য একান্ত ভ্রাতৃত্ব ভালোবাসা শুধু আছে যা চিরকাল থাকবে। কখনো ফাটল ধরাতে পারবেন না।