গোপালগঞ্জ টুঙ্গিপাড়ার সরকারি শেখ মুজিবর রহমান কলেজের জরাজীর্ণ দ্বিতল অ্যাকাডেমিক ভবন ও প্রশাসনিক ভবনের সংস্কারসহ বেশ কয়েকটি কাজ এবং ক্রয়ের টেন্ডার আহ্বান করেন ৭ ই মার্চ ২০২৪ সালে গোপালগন্জ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর।
গত ১৩ ই জুন পিআর প্রকৌশলী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কাজের মেয়াদ দেখানো হয় ১৩ ই নভেম্বর পর্যন্ত। খোঁজখবর নিয়ে জানাগেছে, ঐ প্রতিষ্ঠানে সংস্কার কাজের জন্য ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় গোপালগঞ্জ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর।
বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে ৪ তলা ভবনের ভিতরে ও বাইরে কাজ করানো এবং রং করা। প্রশাসনিক ভবনে কাজ করা এবং রং করা। অধ্যক্ষর অফিসে কাজ করা এবং রং করা। শিক্ষক মিলনায়তনে সংস্কার করা। ৭ টা এ্যসি মেরামত করাসহ অনেক গুলো দৃশ্যমান কাজ দেখা যায়। সরকারি কলেজের পরিত্যক্ত ভবনসহ দুটি ভবনের কাজ না করেই টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে গোপালগঞ্জ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে।
মুলত একটি চক্র ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করছে। একটি প্রতিষ্ঠানের সংস্কার কাজের জন্য নিয়ম অনুযায়ী টেন্ডার এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক। কাজ শেষে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শিক্ষা অধিদপ্তর এবং প্রতিষ্ঠান প্রধানকে কাজ শেষে হস্তান্তর করেছেন। প্রতিষ্ঠান প্রধান কাজ বুঝে নিয়ে হস্তান্তর পেপারে স্বাক্ষর করেন। কিন্তু একটি মহল ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলীকে জড়িয়ে মিথ্যা এবং বানোয়াট বক্তব্য তুলে ধরে মিডিয়াকে ভুল বুঝানোর চেষ্টা করছে। এটা সম্পুর্ন মিথ্যা ষড়যন্ত্র।
এ বিষয় কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ দুলাল কিশোর বর জানান,যখন কাজ শুরু হয়েছে তখন আমি দায়িত্বে ছিলাম না। তবে কাজের মাঝামাঝি সময়ে আমি দায়িত্ব গ্রহন করি। আমি সব কাজ ঠিকঠাক মতো বুঝে নিয়েই হস্তান্তর কাগজে স্বাক্ষর করেছি। তবে কলেজের পাশ দিয়ে সড়ক ও জনপদের রাস্তা যাওয়ার কারণে কলেজের গেট,বাউন্ডারি এমনকি ভবনের অর্ধেক অংশ ভেঙ্গে দেওয়া হয়। জন্য বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে কিছু লোকজন। যাহা সম্পুর্ন মিথ্যা অপবাদ।
এ বিষয় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী অনিমেষ বিশ্বাস বলেন,প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করা হয়েছে। এখানে প্রশাসনিক ভবন,শিক্ষক মিলনায়তন, এসি রিপিয়ারিং,বাথরুমের কাজ,রঙের কাজসহ নানাবিধ কাজ করানো হয়েছে। কাজ শেষে অধ্যক্ষর নিকট কাজ হস্তান্তর করা হয়েছে।
সার্বিক বিষয় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রতিভা সরকার বলেন,সরকারি শেখ মুজিবুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষর চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে PWD রেট সিডিউল ২০২২ সালের রেট অনুসরণ করে "প্রশাসনিক ভবন ও একাডেমিক ভবন ১ এর মেরামত ও সংস্কার কাজ।" ২৫ লক্ষ টাকার একটি প্রাক্কলন বাস্তবতার নিরিখে উপসহকারী প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলী প্রস্তুত করে নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে প্রেরণ করে। প্রাক্কলন অনুমোদনের প্রক্রিয়া হিসেবে,তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয়,ঢাকা সার্কেলে আর্থিক অনুমোদন ও দরপত্র আহ্বানের অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করা হয়। ঢাকা সার্কেল হতে প্রাক্কলনটি প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ সাপেক্ষে প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয় হতে আর্থিক অনুমোদন হয়ে প্রকৌশলীর কার্যালয়,ঢাকা সার্কেল হতে দরপত্র আহ্বান এর অনুমতি প্রদান করার পর যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে ইজিপিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্রটি মূল্যায়ন করে প্রকৌশলী ঢাকা সার্কেল রিভিউয়ার এর নিকট পাঠানো হয়। তা প্রধান প্রকৌশলী হতে অনুমোদন হয়। এরপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিআর প্রকৌশলীকে NOA প্রদান করা হয় ও চুক্তি করা হয়। উক্ত চুক্তি সাপেক্ষে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর গোপালগঞ্জ এর সহকারী ও উপসহকারী প্রকৌশলী এবং প্রতিষ্ঠান এর অধ্যক্ষর তদারকিতে ঠিকাদার কাজটি সম্পন্ন করে অধ্যক্ষর নিকট হস্তান্তর করে।
সকল কাজ সমাপ্তি সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীসহ আমি সাইট পরিদর্শন করি এবং ঠিকাদারের কৃতকাজের বিলের চাহিদার ভিত্তিতে উপসহকারী ও সহকারী প্রকৌশলী মেজরমেন্ট নিয়ে কাজের বিল এমবি বইয়ে লিপিবদ্ধ করে ও বিল প্রদান করা হয়। কিন্তু একটি চক্র আমি উক্ত টাকা আত্মসাৎ করেছি বলে বিভিন্ন মিডিয়াতে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। যাহা সম্পুর্ন মিথ্যা এবং বানোয়াট।