ঔষধ প্রশাসন কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত ট্যাপেনটাডোল ট্যাবলেটে ঝিনাইদহের বাজারে সয়লাব হয়ে গেছে বলে এক অভিযোগ উঠেছে। অবৈধভাবে কিছু অসাধু চক্র এখনো ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত এই ট্যাপেনটাডোল ট্যাবলেট এর বাজারজাত অব্যাহত রেখেছে। মাদকসেবিদের বিকল্প মাদক হিসাবে ব্যবহার শুরু হলেও বর্তমানে ট্যাপেনটাডোলেই আসক্ত হয়ে পড়েছে অনেকেই। বর্তমানের ঝিনাইদহের মাদকাসক্ত যুবকদের পছন্দের তালিকায় এই
ট্যাপেনটাডোল ট্যাবলেট।
যদিও ব্যথানাশক ট্যাপেনটাডোল ট্যাবলেট ' মাদকদ্রব্য হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। মাদকসেবীরা এই ওষুধকে মাদকের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করায় একে ‘খ’ শ্রেণির মাদকদ্রব্য হিসেবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের তফসিলভুক্ত করে ৮ জুলাই২০২০ইং তারিখে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। সেখানে বলা হয়েছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রস্তাবমতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের সুপারিশের ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৬৫ ধারা অনুযায়ী ওই আইনে ‘খ’ শ্রেণির মাদকদ্রব্য হিসেবে ট্যাপেনটাডোল'কে তফসিভুক্ত করা হলো।
দেশের বাজারে কেনা-বেচা উৎপাদন নিষিদ্ধ হলেও ঝিনাইদহের বেশ কিছু ফার্মেসীতে দেদার্সে বিকি হচ্ছে এই ট্যাপেনটাডোল ট্যাবলেট,জানাা যায় অন্যান্য মাদকের তুলনায় এই ট্যাপেনটাডোল ট্যাবলেটের দাম কম হওয়াতে আর সহজে হাতের কাছে পাওয়ার কারনে দিন দিন এই ট্যাপেনটাডোল ট্যাবলেটের চাহিদা বাড়ছে,যার কারনে ভয়াবহ দিকে ঝুকে পড়ছে ঝিনাইদহের এই মাদকের ব্যাবহারকারীরা।
ভারতের সীমান্ত পার হয়ে নিয়মিত ঝিনাইদহের বিভিন্ন ফার্মেসীতে আসছে, প্রকাশ্যে বিক্রি না করলেও আড়ালে নিয়মিত বেশি কিছু ফার্বমেসী এই মাদক বিকি করছে। প্রকৃত মূল্য ১৭ টাকা থেকে ২২ টাকা হলেও মাদকাসক্তদের কাছে বিক্রি করছে ২০০ টাকা থেতে ৩০০ টাকায়, অধিক লাভের কারনে এই ট্যাপেনটাডোল ট্যাবলেটের ব্যাবসায় জড়িয়ে পড়েছে অনেক ফার্মেসী। অনুসন্ধানে জানা যায় শহরের আরাপপুর,মর্ডান মোড়,ট-বাজারের ভেতরে,ক্যাসেল ব্রীজের পাশে, সাবেক এমপি অপুর বাড়ির আশেপাশেসহ বিভিন্ন স্থানের কিছু ফার্মেসীতে দেদার্সে বিক্রি হচ্ছে ট্যাপেনটাডোল ট্যাবলেট।
ঝিনাইদহ শহরের কিছু মাদকসেবিদের সাথে কথা বলে জানা যায় , ইয়াবা ও ফেন্সিডিল এর বিকল্প হিসাবে তারা প্রথমে ট্যাপেনটাডোল ট্যাবলেট সেবন শুরু করে,পরবর্তীতে এটাতেই তারা আসক্ত হয়ে পড়েছে।
যারা ইয়াবা মাদকে আসক্ত তারা ট্যাপেনটাডোল ট্যাবলেট ইয়াবার মতোই ফয়েল পেপারে গলিয়ে সেবন করে,আর যারা ফেন্সিডিল মাদকে আসক্ত তারা বিভিন্ন কপ-সিরাপের সাথে এটা মিশিয়ে বা সরাসরি সেবন করে। অনেকটাই একই রকমের নেশা হয় বলেও তারা জানিয়েছে।
ভারত সিমান্ত পার হয়ে, বাই রোডে বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির রিপ্রেন্টেটিভ কর্মিদের মাধ্যমে ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঝিনাইদহের বাজারে সয়লাব হচ্ছে ট্যাপেনটাডোল ট্যাবলেট । প্রায় চুয়াডাঙ্গায় প্রশাসনের অভিযানে এই ট্যাপেনটাডোল ট্যাবলেটসহ মাদক ব্যাবসায়ী গ্রেফতার হলেও ঝিনাইদহের ব্যবসায়ীরা ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গোয়েন্দা নজরদারি বা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দুর্বলতায় ট্যাপেনটাডোল ট্যাবলেটের মাদকের ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এই মাদকের ব্যাপকতা রোধে অতিদ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে, দেশের যুবসমাজকে রক্ষা করতে, মাদক নিয়ন্ত্রণে আরো সোচ্চার হতে হবে।