মো:,মেহেদী হাসান ফুয়াদ দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি:-
দিনাজপুর জেলা ধান চাউল ব্যবসায়ী গ্রুপের এক তরফা গোপনীয় নির্বাচন বাতিলের দাবি ও পরিচালনায় অনিয়ম, আর্থিক দূর্নীতি,সম্পাদকের স্বৈরাচারিতা এবং অবৈধ কার্যনির্বাহী কমিটি বাতিলের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মেয়াদী কমিটির সভাপতিসহ অনুগতরা। কথিত ওই নির্বাচন বাতিলসহ বিধি মোতাবেক পুনরায় নির্বাচন দাবি জানানো হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর-২০২৪) বেলা সাড়ে ১১ টায় দিনাজপুর প্রেস ক্লাবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন মেয়াদ থাকা কমিটির সভাপতি মো. মোশাররফ হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী কমিটির সদস্য সলিল বসাক, হাসিম উদ্দিন হাশিম, জহির উদ্দিন, তাজেবুল, সাদেমুল ইসলাম এবং রফিকুল ইসলামহ অন্যান্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় দিনাজপুর জেলা ধান চাউল ব্যবসায়ী গ্রুপের নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ থাকা সত্তেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় গত বছরের ৪ ঠা জানুয়ারী এক তরফাভাবে আগাম নির্বাচন সম্পন্ন দেখানো হয়েছিল। অথচ নির্বাচন হয়েছিল গত বছরের ৪ঠা মার্চ। রাজশাহী নিবন্ধন অফিসে নির্বাচনের জাল কাগজপত্র দাখিল করা হলে জালিয়াতির বিষয়টি জানতে পারেন তারা। এ ব্যাপারে তারা রাজশাহী নিবন্ধন অফিসে নালিশ করায় কমিটির সাধারন সম্পাদকের কাছে নির্বাচনির কাগজপত্র দাখিলের জন্য নোটিশ পাঠিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।
জালিয়াতি ধরা পড়ায় কথিত নির্বাচন কমিশনার এ্যাডভোকেট আশফাক আহমেদকে পুনরায় নির্বাচন কমিশনার বানানোসহ আপিল বোর্ড গঠনের নামে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়েছে। এ ব্যাপারে বানিজ্য মন্ত্রণালয়ে চলতি বছরের গত ১৪ নভেম্বর অভিযোগ জানানো হয়। তৎপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে কথিত নির্বাচনের বিষয়ে প্রতিবেদনহ নির্বাচন কেন বাতিল করা হবেনা মর্মে গত ২৬ নভেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিবেদন প্রেরণ করার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নির্দেশ প্রদান করেন এবং সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নিকট দিনাজপুর জেলা ধান চাউল ব্যবসায়ী গ্রুপের কার্যনির্বাহী কমিটি বাতিল করে বাণিজ্য সংগঠক আইন-২০২২ এর ১৭ ধারা মোতাবেক কেন প্রশাসক নিয়োগ করা হবে না, এই বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়-ইতিমধ্যে ওই অনিয়মের নির্বাচন বন্ধ করার জন্য গত ১৭ নভেম্বর পরিচালনা কমিটির নির্বাচন কমিশনারকে পত্র প্রদান করি এবং বানিজ্য মন্ত্রনালয়ে অভিযোগ দাখিল সর্ম্পকে তাকে অবহিত করি। পরিবর্তিত জাল নির্বাচনি তারিখ ০৪ জানুয়ারী ২০২৩ ইং এর কাগজপত্রে জালিয়াতি ও অনিয়ম জানা স্বতেও নির্বাচন কমিশনার এ্যাডভোকেট আশফাক আহম্মেদ প্রভাবিত হয়ে অর্থের লোভে ওই অবৈধ নির্বাচন পরিচালনা করেন। বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের প্রতিবেদন ও কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রক্রিয়াধীন থাকার পরেও নির্বাচন কমিশনার গত ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ইং তারিখে একক প্যানেলকে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত ঘোষনা করেন।
উল্লেখ্য, দিনাজপুর ধান চাউল ব্যবসায়ী গ্রুপ-এর ২০২৩-২০২৪ ও ২০২৪-২০২৫ ইং সালের দ্বি বার্ষিক (২৪ মাস) মেয়াদি আগামী ৩ মার্চ ২০২৫ ইং থাকার পরেও গত ৩ ডিসেম্বর ২৪ ইং তারিখে একতরফাভাবে ২০২৫-২০২৬ ও ২০২৬-২০২৭ ইং সালের দ্বি বার্ষিক (২৪ মাস) মেয়াদি কমিটি ঘোষনা করে যাহা চরম অনিয়ম ও অবৈধ। সংগঠন পরিচালনায় গঠনতন্ত্র বিরোধী কার্য্যক্রম প্রতিয়মান, যাহার প্রমান রয়েছে। সভাপতির অনুমতি ছাড়া এবং অবগত না করে সাধারন সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম একক সিদ্ধান্ত ও স্বাক্ষরে কার্য্যনির্বাহী কমিটির সভা বিভিন্ন সময়ে অফিস ও অফিসের বাহিরে গোপনে আহবান করে। কোনো সভারই রেজুলেশনে সভাপতি মো: মোশাররফ হোসেনের স্বাক্ষর নেয়ার প্রয়োজন মনে করেননি। নিজের ইচ্ছেমত কার্য্যক্রম পরিচালনা করেন যাহা স্বৈরাচারি আচরণের মধ্যে পড়ে। সাধারন সম্পাদক গ্রুপের তহবিল হতে ইচ্ছেমতো টাকা খরচ করে এবং খরচের কোনে ভাউচার করা হয়না।
সভাপতিকে অবগত করা বা স্বাক্ষরও নেয়া হয়না। গত ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ইং তারিখের সাধারন সভায় সাধারন সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম বক্তব্যে বলেন, হাসিম সাহেব রাজশাহী অফিসে অভিযোগ করায় সংগঠনের তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ওই টাকাগুলো হাসিম সাহেবকেই দিতে হবে। প্রকৃত অর্থে সাধারন সদস্যদের মাঝে মিথ্যা তথ্য ও হাসিম সাহেব এর নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ৩ লাখ টাকা সাধারন সম্পাদক নিজেই আত্মসাত করেছেন। কমিটি তহবিলে ৩৫ লাখ টাকা এবং সাড়ে তিন শতক জমি থাকা সত্তেও নিজস্ব অফিস ভবন নির্মান না করে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা আগাম পরিশোধ করে ব্যক্তি স্বার্থ অফিস ভাড়া নিয়েছেন সাধারন সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম।