মোঃ শিহাব উদ্দিন গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:-

২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রতিবছর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালন করে থাকত দলটি। গত ১৬ বছর ধরে বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি তে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ সহ পুলিশ, প্রশাসন সহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতেন।

এভাবেই সারাদিন বিভিন্ন সংগঠন সহ নানা শ্রেনী পেশার মানুষ শ্রদ্ধা জানিয়ে থাকতেন।
তবে এইবারের চিত্রটি দেখা গেল ভিন্ন। গত ৫ ই আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতা হারানোর পর ১৬ বছরের মধ্যে এবারই এক ভিন্ন বিজয় দিবস পালিত হচ্ছে টুঙ্গিপাড়ায়। এবছর সমাধিস্থল একেবারেই জনশূন্য। খা খা করছে সমাধি প্রাঙ্গণে। শ্রদ্ধা জানাতে আসেনি কোন নেতাকর্মী। এদিকে নিরাপত্তার বলয়ে সমাধির চারপাশ ঘীরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সোমবার ১৬ ই ডিসেম্বর, সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সমাধির ৩ টি গেটে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ। সমাধিস্থল জনশূন্য। দেখা নেই কোন নেতাকর্মীর। ভিতরে প্রবেশ করে দেখা গেল, সমাধির বিভিন্ন সড়কে পড়ে আছে গাছের মরা পাতা। পথের টাইলসে পড়েছে শ্যাওলা। বিশ্রামাগার ও সমাধির বাসার বিভিন্ন আসবাবপত্রে জমেছে ধুলো। সমাধির ফুলগাছ গুলোও যেন প্রায় মৃত। সমাধীর দায়িত্ব পালন করা সরকারি কর্মকর্তা - কর্মচারীরাও হাওয়া। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু কল্যান ট্রাস্টের অধীনস্ত আউটসোর্সিংয়ের কর্মীরা দেখভাল করছে সমাধিটি। তবে সমাধির মসজিদে এখনো রয়েছে খতিব।
রহিজ মোল্লা নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, দল ক্ষমতায় থাকতে গত ১৬ বছর ধরে প্রতিবছর এইদিনে সমাধিস্থলে একইঞ্চি জায়গা খালি থাকতো না। কেন্দ্রীয় নেতা সহ স্থানীয় নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখর থাকত সমাধি প্রাঙ্গণ। শ্রদ্ধা জানানো সহ নানা আয়োজন থাকতো সমাধিতে। তবে এই বছর হাসিনা ক্ষমতায় নেই বলে কেই বিজয় দিবস উপলক্ষে সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসে নাই। এছাড়াও উপজেলার কোথাও কোন প্রোগ্রাম করছে না আওয়ামী লীগ।

বঙ্গবন্ধুর সমাধির মসজিদের ইমাম হাফেজ নওয়াব আলী বলেন, অবস্থা বেশি ভাল না। খুব চাপে আছি। আজকে কেউ সমাধিতে আসেনি। কেউ শ্রদ্ধা জানায়নি। ১৬ বছরের মধ্যে আজই প্রথম বিজয় দিবসে এমন জনশূন্য বঙ্গবন্ধুর সমাধি।
ঁঁজসিম মুন্সি নামে স্থানীয় এক সংবাদকর্মী বলেন, সমাধির অবস্থা জানার জন্য ও সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলাম।সমাধিস্থলে কোন নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি। বিজয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কোন নেতাকর্মীকে চোখে পড়েনি। ভিতরে প্রবেশ করতে চেয়েছিলাম তবে কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। গেটে পুলিশ পাহারায় রয়েছে।
টুঙ্গিপাড়া থানার ওসি, খুরশিদ আলম বলেন, যে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ সমাধির গেটে মোতায়েন করা আছে। এছাড়াও উপজেলায় আওয়ামী লীগের কোন প্রোগ্রাম আমাদের চোখে পড়েনি বা শুনি নাই। নিরাপত্তার কারনে সমাধিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।