উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ প্রতিনিধি:-
আজ ২২ ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধা, শব্দ সৈনিক ও চিত্র পরিচালক নারায়ণ ঘোষ মিতা এঁর জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
নারায়ণ ঘোষ মিতা একাধারে একজন বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার, অভিনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দ সৈনিক।
জন্ম ২২ ডিসেম্বর ১৯৩২ সালে পুরান ঢাকায়।এ দেশের চলচ্চিত্রে তাঁর হাত ধরে অভিষেক ঘটেছে অনেক অভিনেতা অভিনেত্রিদের। ১৯৭৫ সালে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের প্রথম আয়োজনে ‘লাঠিয়াল’ ছায়াছবির জন্য শ্রেষ্ঠ প্রযোজক ও পরিচালক বিভাগে পুরস্কার অর্জন করেন।
মিতা ষাটের দশকে চলচ্চিত্রাঙ্গনে প্রবেশ করেন। ১৯৬৮ সালে পারিবারিক টানাপোড়েনকে কেন্দ্র করে নির্মাণ করেন ‘এতটুকু আশা’ চলচ্চিত্রটি। তারও আগে তিনি নির্মাণ করেন মুস্তাফা-সুচন্দাকে নিয়ে ‘চাওয়া পাওয়া’ চলচ্চিত্রটি। এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমেই রূপালি পর্দায় শিশু শিল্পী হিসেবে আগমন ঘটে একসময়ের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের নাট্যাভিনেত্রি এবং খ্যাতিমান নৃত্য শিল্পী শুভ্রার।
১৯৬৯ সালে মিতা নির্মাণ করেন ‘নীল আকাশের নীচে’, যেখানে পারিবারিক বন্ধনকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ১৯৭৪ সালে তাঁর নির্মিত ‘আলোর মিছিল’ চলচ্চিত্রে তিনি মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বিশৃঙ্খলা ও অনিয়ম তুলে ধরেন।তাঁর নির্মিত চলচ্চিত্রের মধ্যে ‘নীল আকাশের নীচে, সাহেব, এতটুকু আশা, অলঙ্কার, সুখের সংসার, কখগঘঙ, দীপ নেভে নাই উল্লেখযোগ্য। ‘কাঁচের স্বর্গ’ ছবিতে তাঁর অনবদ্য অভিনয় স্মরণে রাখার মত।
ওপার বাংলায় চলে যাবার পর সেখানেও তিনি বেশকিছু রুচিসম্মত চলচ্চিত্র নির্মান করে তাঁর মেধা ও দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দ সৈনিক।সেখানে ‘জল্লাদের দরবার’ নাটকে অভিনেতা রাজু আহমেদ, আজমল হুদা মিঠু ও কল্যাণ মিত্রের সাথে অভিনয় করে তিনি ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেন।
অজানা এক নিরব অভিমানে বুক ভরা ব্যথা আর কষ্ট নিয়ে খ্যাতিমান পরিচালক নারায়ন ঘোষ মিতা দেশ ছেড়েছিলেন। তিন পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক তিনি। ১ ডিসেম্বর ২০০২ সালে প্রথিতযশা এই চিত্র পরিচালক মৃত্যুবরন করেন।(অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা সামনে রেখে অতীতের সোনালি স্মৃতি রোমন্থন করছেন পরিচালক মিতা)#