মোঃ লুৎফর রহমান লিটল সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:-
সিরাজগঞ্জ, ২ জানুয়ারি ২০২৫ (বাসস): ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা রয়েছে পুরো সিরাজগঞ্জ। গত তিনদিন ধরে জেলায় দেখা নেই সূর্যের আলো। এরই মধ্যে কনকনে ঠান্ডায় হাঁড় কাঁপানো শীতে জনজীবন বিপর্যন্ত, বিশেষ করে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নিম্নআয়ের ও খেটে খাওয়া মানুষদের। অন্যদিকে, শীতের প্রকোপের সাথে সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ।
এ রকম পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে জেলার চরাঞ্চলের মানুষেরা। এরই মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে শীতবস্ত্র, বিশেষত কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে।জেলার চলনবিল অধ্যুষিত তাড়াশ উপজেলার কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, হিমেল হাওয়া ও তীব্র শীতের মধ্যেই বেগুন ও মরিচ খেতের পরিচর্যা করতে হচ্ছে। কৃষকরা শীতের মধ্যেই মাঠে কাজ করছেন।
অন্যদিকে, যমুনার চরাঞ্চল অধ্যুষিত কাওয়াকোলা ইউনিয়নের প্রবীণ বাসিন্দা ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আব্দুল হামিদ জানান, তীব্র শীতে যমুনা নদীভাঙ্গন কবলিত এলাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নিম্নআয়ের ও খেটে খাওয়া মানুষদের। জেলায় শীতের প্রকোপের সাথে সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক গুণ।২৫০-শয্যাবিশিষ্ট সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আকিকুর নাহার মনি জানান গত তিনদিনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ঠাণ্ডা রোগে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই বেশি। তিনি এই ঠাণ্ডায় শিশুদের মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর পাশাপাশি ভিটামিন ‘সি’ ও জুস জাতীয় খাবার খাওয়ানো এবং গরম কাপড় দিয়ে শিশুদের ঢেকে রাখার পরামর্শ দেন।
তিনি জানান, হাসপাতালে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা সার্বক্ষণিক চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
জেলায় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সহকারী পরিচালক মো. রবিউল আলম জানান, শীতে সিরাজগঞ্জে এ পর্যন্ত পাঁচশত ছিন্নমূল মানুষের মধ্যে জেলা ইউনিটের পক্ষ থেকে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, এ পর্যন্ত সারা জেলায় শীতার্ত মানুষের মধ্যে নয় হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আরও একহাজার কম্বল মজুদ রয়েছে, যেখানে প্রয়োজন সেখানেই জরুরি ভিত্তিতে তা বিতরণ করা হবে।