Crime News tv 24
ঢাকাশনিবার , ৪ জানুয়ারি ২০২৫
  1. অন্যন্য
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. খেলা
  5. জাতীয়
  6. দেশজুড়ে
  7. ধর্ম
  8. ফিচার
  9. বাংলাদেশ
  10. বিনোদন
  11. মতামত
  12. রাজনীতি
  13. রান্না
  14. রাশিফল
  15. লাইফস্টাইল
আজকের সর্বশেষ সবখবর

আশাশুনিতে বিনা চাষ ও চাষকৃত জমিতে সরিষা আবাদে সাফল্য কৃষকরা।

admin
জানুয়ারি ৪, ২০২৫ ১১:৫২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিএম আলাউদ্দীন আশাশুনি প্রতিনিধি:-
আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিনা চাষে ও চাষকৃত জমিতে সরিষা আবাদ করে সাফল্য পেয়েছেন কৃষকরা। এলাকায় গেলে দেখা মিলবে দিগন্তজুড়ে হলুদ ফুলের নয়ন জোড়া সুশোভিত পরিবেশ। এ পদ্ধতিতে এক ফসলি ধানি জমি থেকে বাড়তি ফসল হিসেবে বিপুল পরিমাণ সরিষা উৎপাদন হচ্ছে তেমনি পতিত জমিতে অতিরিক্ত ফসল ঘরে তুলতে পারার স্বপ্নে কৃষকরা বিভোর হচ্ছে। হলুদ ও সবুজে মিশ্রিত নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে অপূর্ব অনুভূতিতে মানুষ তৃপ্তিবোধ করছে।
আশাশুনি উপজেলায় কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে এবছর ৭১০ হেক্টর বা ৫ হাজার ৩২৫ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে রিলে ক্রপ বা বিনা চাষে ৩৬০ হেক্টর ও চাষকাজ করে ৭১০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। এসব জমিতে উন্নত জাতের বীজ ব্যাবহার করা হয়েছে। যার মধ্যে টরি-৭ জাতের ১৪০ হেক্টর, রবি-৯ জাতের ৮০ হেক্টর, বারি-১৪ জাতের ৪৭০ হেক্টর, বারি-১৭ জাতের ১০ হেক্টর ও বীণা-৯ জাতের ১০ হেক্টর। বিঘার হিসাবে ৫৩২৫ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। এসব জমির মধ্যে প্রনোদনা ১৫৫০ বিঘা, রাজস্ব ৩০ বিঘা, ক্লাইমেট স্মার্ট ১৫ বিঘা, পার্টনার ১২ বিঘা, বীজ সহায়তা ১৮৯ বিঘা, প্রদর্শনী ৩০ বিঘা ও বীনা বীজ সহায়তা ১০০ বিঘা। মোট ১৯২৬ বিঘা এবং কৃষকরা নিজেরা চাষ করেছেন ৩৩৯৯ বিঘা জমিতে। উপজেলায় ১২ হাজার ৫০০ কৃষক সরিষা আবাদ করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিস ও সংশ্লিষ্ট কৃষকরা জানান, আমন ধান কাটার পর বোরো ধান রোপণের কিংবা ঘেরে পানি উঠানোর আগ পর্যন্ত উপজেলায় বিপুল পরিমাণ জমি অলস পড়ে থাকে। কয়েক বছর আগে থেকে এই সময়টা কাজে লাগিয়ে বাড়তি ফসল হিসেবে বিনা চাষে সরিষা আবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে আসছে কৃষি বিভাগ। প্রথমে ততটা সাড়া না পাওয়া গেলেও ক্রমে ক্রমে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠছে কৃষকরা। এই পদ্ধতি এখন কৃষকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, আশাশুনি উপজেলায় ১১ ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে প্রায় ৭১০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে বড়দল ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ১৪৩ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এ ইউনিয়নের ডুমুরপোতা, জামালনগর, কেয়ারগাতী, গোয়ালডাঙ্গা, চাম্পাখালী, নড়েরাবাদ, বামনডাঙ্গা, ফকরাবাদ, বুড়িয়া, মধ্যম বড়দল, দক্ষিণ বড়দল সহ অধিকাংশ গ্রামের ধানি জমির ধান উঠে গেলেও এখন দৃষ্টিনন্দন হলুদ সরিষা ফুলে ছেয়ে গেছে।
গোয়ালডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আ: মজিদ  জানান, আমন ধান কাটার ৫/১০ দিন আগে খেতে সরিষার বীজ ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। পরে ধান কেটে নিলে সরিষা গাছ সতেজ হয়ে ওঠে। চাষি রেজাউল ইসলাম জানান, আমন ধান কাটার পর জমি জো হতে ১০/১২ দিন কেটে যায়। এরপর জমি চাষযোগ্য করতে ১০/১২ দিন চলে যায়। ফলে চাষ করে সরিষা বুনলে সরিষা তুলে ঘেরে পানি তুলতে দেরি হয়ে যায়। এ ছাড়া বিঘাপ্রতি জমি চাষের খরচও পড়ে যায় হাজার টাকার ওপরে। তাই বিনা চাষে সরিষা আবাদ করায় চাষের খরচ বেঁচে যাচ্ছে, উৎপাদন খরচও কমে আসছে।
একই এলাকার কৃষক হাফিজ জানান, এই পদ্ধতিতে সরিষা চাষে প্রতি বিঘায় মাত্র ১ হাজার টাকা খরচ হয়। সেখানে প্রতি বিঘায় সরিষা পাওয়া যায় ৩ থেকে ৪ মণ পর্যন্ত। যার বাজার মূল্য ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, সরিষা আবাদ বেশ ভালই হয়েছে। কোন বড় ধরনের দুর্যোগ না হলে প্রতি হেক্টর জমিতে এক টন করে সরিষা উৎপাদন হবে। কৃষকরা তাদের তেলের চাহিদা পুরনের পাশাপাশি বিক্রয় করে সংসারে কাজে লাগাতে সক্ষম হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এস এম এনামুল ইসলাম জানান, এ বছর আশাশুনিতে প্রায় ৭১০ হেক্টর জমি সরিষা চাষের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। যার মধ্যে ৩৬০ হেক্টর রিলে বা বিনা চাষ পদ্ধতির মাধ্যমে চাষাবাদ করা হয়েছে। এখনো কোন সমস্যা দেখা দেয়নি। আমরা উপ সহকারী কৃষী অফিসারদেরকে নিয়মিত ব্লকে পাঠিয়ে কৃষকদের সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে আসছি। কৃষকরা নিয়মিত ক্ষেত পরিচর্চায় ব্যস্ত আছে। আল্লাহর রহমত থাকলে এবং আবহাওয়া অনুকূল থাকলে ইনশাল্লাহ আশাপ্রদ ফলন পাওয়া যাবে। আবাদকৃত এ সরিষা স্থানীয় তেলের  চাহিদা মিটাবে। আমরা উপলব্ধি করি সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান উন্নয়নের মানষিকতা নিয়ে এক সাথে কাজ করা হলে পরবর্তী বছরগুলোতে সরিষার আবার উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে আশাকরি। বৃহৎ পরিসরে এই পদ্ধতিতে সরিষা চাষ করে ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমানো সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।