বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ১৭ জানুয়ারি সকাল ১১ ঘটিকায় শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর শুল্ক-কর বৃদ্ধি, টিসিবির পণ্য বিক্রি বন্ধ এবং ৪৩ লাখ কার্ড বাতিল করার প্রতিবাদে আহ্বায়ক এম এ আলীম সরকার এর সভাপতিত্বে গণ-সমাবেশ ও বিক্ষোভ প্রকাশ অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতির বক্তব্যে এম এ আলীম সরকার বলেন, গত দুই-তিন বছরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ ওষুধের মূল্য যেভাবে বেড়েছে, তাতে শ্রমিক-কৃষক, নিম্ন- নিম্ন-মধ্যবিত্ত সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা অসহনীয় হয়ে পড়েছে। দেশের ৪০% লোক চরম দুর্গতির মধ্যে কোনো রকমে খেয়ে-পরে বেঁচে আছে। সরকারের মুদ্রানীতি, রাজস্ব নীতি এবং বাজার ব্যবস্থাপনায় কোনো সঠিক সমন্বয় না থাকার কারণে ক্রমাগতভাবে দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলছে। গত ডিসেম্বর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১৩ শতাংশ। উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে মানুষ অনেক চাপে আছে। সরকার জনগণের সাথে আলোচনা না করে আইএমএফ এর পরামর্শক্রমে শর্তসাপেক্ষে নতুন করে প্রয়োজনীয় শতাধিক পণ্য ও মুঠোফোনসহ অন্যান্য সেবার ওপর অত্যধিহারে শুল্ক-কর বাড়িয়ে অধ্যাদেশ জারি করেছে। এর ফলে জনগণের পকেট থেকে কাটা যাবে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। এ অবস্থায় মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় আরেক দফা বাড়বে। সাধারন মানুষের জীবন চালানো দুর্বিষহ হয়ে পড়বে। এরই মধ্যে টিসিবির পণ্য ট্রাকে বিক্রি বন্ধ এবং ৪৩ লাখ পরিবারের কার্ড বাতিল করা হয়েছে, যা একেবারেই অনুচিত। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণের অনেক প্রত্যাশা। সরকারকে হতদরিদ্র শ্রমিক নিম্ন-মধ্যবিত্তদের সহায়তার পরিসর বাড়ানো এবং বাজার ব্যবস্থা স্থিতিশীল রাখার জন্য প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এহেন বাজার পরিস্থিতিতে নতুন করে রেশন ও ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সরকারের নিকট বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির আহ্বান, অবিলম্বে শতাধিক পণ্য ও মুঠোফোনসহ অন্যান্য সেবার ওপর অর্পিত শুল্ক-কর অধ্যাদেশ জারি প্রত্যাহার করতে হবে এবং টিসিবির পণ্য খোলা বাজারে বিক্রি ও ৪৩ লাখ পরিবারের যথাযথ তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কার্ড আশু চালু করতে হবে। আরও ২০ লাখ পরিবারের নতুন কার্ড চালু করার জন্য অন্তর্র্বতী সরকারের নিকট দাবি জানচ্ছি। বাংলাদেশের জন্য গণতন্ত্র নিয়ে গভীর চিন্তা-ভাবনা দরকার। কেবল নির্বাচনই গণতন্ত্র নয়। গণতন্ত্রের মধ্যে সর্বসাধারণের কল্যাণের নীতি ও ভবিষ্যৎ-ভাবনা যুক্ত রাখতে হয়। বাংলাদেশের জন্য এটা অপরিহার্য। বাংলাদেশের নির্বাচনের কর্মসূচির সঙ্গে সমগ্র জনগণের অর্থনীতি, রাজনীতি ও সংস্কৃতির উন্নতি প্রত্যেক দল থেকে এবং সরকারের দিক থেকে ঘোষণা করা অবশ্যই কর্তব্য।মতিঝিলে এনসিটিবির সামনে আদিবাসী ছাত্র-জনতার কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেফতার ও বিচার করতে হবে।
আমরা এই সরকারের ভালো কাজে সাফল্য কামনা করছি। গণ-সমাবেশ সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় সদস্য লেখক অমূল্য কুমার বৈদ্য। আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সদস্য গবেষক বিজন হালদার, প্রভাষক মহসিন আলমগীর প্রমুখ।