Crime News tv 24
ঢাকাসোমবার , ২০ জানুয়ারি ২০২৫
  1. অন্যন্য
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. খেলা
  5. জাতীয়
  6. দেশজুড়ে
  7. ধর্ম
  8. ফিচার
  9. বাংলাদেশ
  10. বিনোদন
  11. মতামত
  12. রাজনীতি
  13. রান্না
  14. রাশিফল
  15. লাইফস্টাইল
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ঝিনাইদহে বাড়ছে তামাক চাষ,সেই সাথে বাড়ছে কৃষকের স্বাস্থ্য ঝুঁকি।

এম.মাসুম আজাদ,ঝিনাইদহ ব্যুরো প্রধান
জানুয়ারি ২০, ২০২৫ ১০:৫২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

পরিবেশ প্রকৃতি ও মানবদেহের জন্য চরম ক্ষতিকর
ফসল তামাকের চাষ ঝিনাইদহে আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। উৎপাদন খরচের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় এ অঞ্চলে বেড়েই চলেছে তামাক চাষ। তামাক চাষ বন্ধে কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই। বিভিন্ন ভাবে কৃষকদের প্রলুব্ধ করছে টোবাকো কোম্পানি, তামাক চাষে ঋণ দেওয়া, উৎসাহ প্রদান, অগ্রীম কিনে নেবার প্রতিশ্রুতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে ঝিনাইদহের বৃটিশ আমেরিকান টোবাকো কোম্পানির বিরুদ্ধে।
কৃষকদের তামাক চাষ বন্ধে ঝিনাইদহের তুলা উন্নয়ন বোর্ডের তেমন কোনো ভূমিকা দেখা যায় না। কৃষকদের তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করার জন্যে ঝিনাইদহের তুলা উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন প্রকল্প রয়েছে। কৃষকদের সচেতন করা, সার,বীজ ইত্যাদি প্রদানের মাধ্যমে তামাকের পরিবর্তে তুলা চাষে উৎসাহিত করে দেশের কটন শিল্পের উন্নয়ন সাধন করার জন্যে। অধিকাংশ তামাক চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের কাছে কখনোই তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কেউই আসেনি।
তুলা উন্নয়ন বোর্ড কি জিনিস সেই সম্পর্কেও নেই তাদের কোনো ধারণা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এবার জেলার ৬ উপজেলাতে তামাক চাষ হয়েছে ৯ শ’২৫ হেক্টর জমিতে। সদর উপজেলা গান্না, শৈলকুপা, হরিনাকুন্ডু সহ বিভিন্ন এলাকার মাঠগুলোর যেদিকে তাকানো যায় শুধু তামাক আর তামাক। এলাকাগুলোর প্রায় প্রতিটি পরিবারই তামাক চাষের সাথে জড়িত। হরিনাকুন্ডুর একাধিক তামাক চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতি ১ বেল (৭০ কেজি) তামাক প্রকারভেদে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা বিক্রি হয়। প্রতি বিঘা জমিতে তামাক চাষে খরচ হয় প্রায় ৪০ হাজার টাকা। আয় হয় ১ লক্ষাধিক টাকা। বড়দের পাশাপাশি শিশুরাও ক্ষেত পরিচর্যা থেকে শুরু করে সংগ্রহ করছে তামাক পাতা। সেই পাতা প্রক্রিয়াজাতকরণেও তারা কাজ করছে। তামাক চাষের যেমন প্রভাব পড়ছে পরিবেশের উপরে তেমনি দীর্ঘদিন ধরে কেউ তামাক চাষের সাথে জড়িত থাকলে তার হার্ট এ্যাটাক, স্ট্রোক ও ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও এ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিসসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। তাই মানবস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ এই তামাক চাষ বন্ধ বা দ্রুত হ্রাস করা প্রয়োজন। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা গান্নার তামাক চাষী মোঃ আসলাম বিশ্বাস সাংবাদিকদের জানান, তামাক চাষে খরচ অনেক কম হয়, আর ফলন ভালো হলে অনেক লাভ হয়। লাভ বেশি হওয়ায় আমরা তামাক চাষ করি। তামাক কোম্পানীগুলো আমাদের বিভিন্ন সময় নানাভাবে উৎসাহ দেয়। তিনি আরো জানান, আমরা জানি তামাক শিশুসহ সকলের জন্য ক্ষতিকারক। তারপরও আমরা গরিব মানুষ বলে খরচ বাঁচানোর জন্য শিশুদের দিয়ে এই কাজ করাই।
হরিনাকুন্ডুর তামাক চাষী আব্দুল আজিজ জানান, আমার পরিবারের সবাই তামাক চাষের সাথে জড়িত, স্বাস্হ্যের ক্ষতি হয় কি না তা আমরা জানি না,তবে সিজেনে অন্যে চাষের চেয়ে তামাক চাষে লাভ অনেক বেশি হয়,তাছাড়া তামাক কোম্পানির লোকেরা এসে খোঁজ খবর রাখেন, তাই আমরা তামাক চাষ করি। তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কেউ কখনো আমাদের কাছে আসেনি। আমরা জানি না তারা কি করেন।
তামাক চাষ ও ক্ষতিকর প্রভাবের বিষয়ে কথা হয় পরিবেশবিদ অধ্যাপক সামছুল আলমের সঙ্গে। তিনি জানান, তামাক গাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে বিষাক্ত পদার্থ বের হয়। যা পরিবেশেরও মারাত্মক ক্ষতি করে। এছাড়া তামাক চাষে প্রচুর সার ও কীটনাশক ব্যবহৃত হয়, যা মাটি ও পানি দূষণ করে এবং মাছসহ জলাশয়ের উদ্ভিদচক্রের মারাত্মক ক্ষতি করে এছাড়াও যে সকল কৃষক তামাক চাষে দীর্ঘ দিন জড়িত তাদের রয়েছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি তাই অবশ্যই তামাক চাষ বন্ধ করতে হবে।