দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে দেড় বছর পর দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণি শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে। স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সরাসরি শ্রেণি পাঠদানে অংশ নেবে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণি পাঠদান শুরু করার লক্ষ্যে রাজধানীসহ সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রথম দিন উৎসব-আয়োজনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে বরণ করবে শিক্ষার্থীদের।
নির্দেশনা অনুযায়ী গত ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাজধানীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত সাজাতে দেখা গেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রবেশ পথে রঙিন বর্ণে ওয়েলকাম লেখা দিয়ে সাজানো হয়েছে। বিভিন্ন শ্রেণিতে রঙিন বেলুন টানানোসহ বিভিন্ন কারুকাজ দিয়ে সাজানো হয়েছে।
শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক স্মিতা দাস তুলিসহ অন্যান্য শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠান সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে।
রাজধানীর আজিমপুর অগ্রণী স্কুলের বিভিন্ন শ্রেণি কক্ষ সাজানো হয়েছে ব্যতিক্রমী আয়োজনে। বিভিন্ন রঙের বেলুনে প্রত্যেক সপ্তাহের নাম, বিভিন্ন রঙে ছয় ঋতুর নাম লিখে সাজানো হয়েছে রুমের ভেতরের ওয়াল। গাছের ছবি আঁকিয়ে বিভিন্ন পাতায় লেখা হয়েছে ইংরেজি ১২ মাসের নাম।
নারায়নগঞ্জ সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফাতেমা কাশেম বলেন, যে দিন থেকে সরকাী ভাবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সেদিন থেকেই প্রতিষ্ঠান প্রস্তুতের জন্য তোড়জোড় শুরু করা হয়েছে। দেড় বছর পর প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসবে সে কারণে শ্রেণিকক্ষসহ পুরো বিদ্যালয় বাড়তি করে সাজানো হচ্ছে। ১২ সেপ্টেম্বর প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের ফুল ও চকলেট দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রিয় প্রাঙ্গণে বরণ করা হবে। শিক্ষকরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, শিক্ষর্থীদের বরণ করার উপলক্ষ্যে। স্কুলের সকল শিক্ষক, কর্মচারীদের মনে অনেকটা উৎসবের আনন্দ বিরাজ করছে।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের বরণ করতে প্রতিটি রুম, প্রতিষ্ঠানের আঙিনা সাজানো হচ্ছে রঙিন কাগজ, জরির মালা, বিভিন্ন রঙের বেলুন ও কাগজের ফুল দিয়ে।
রাজধানীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি ভালো হলেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রস্তুতি নিয়ে নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি নির্দেশনা বা রুটিন বুঝতে পারেনি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ গোলাম মো. ফারুক বলেন, অনেকের নির্দেশনা এবং রুটিন বুঝতে সমস্যা হয়েছে। আশা করছি আজ শনিবারের (১১ সেপ্টেম্বর) মধ্যে সমস্যা কেটে যাবে।
প্রথম দিনের প্রস্তুতি সম্পর্কে অধ্যাপক ড. সৈয়দ গোলাম মো. ফারুক বলেন, আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছি স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব মানার ক্ষেত্রে। যেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তাতে কোনও সমস্যা হবে না। শিক্ষা কর্মকর্তা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীসহ অভিভাবকদের সচেতন করতে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরে প্রত্যেকের করণীয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকরা যথাযথ দায়িত্ব পালন করলে কোনও সমস্যা হবে না। তবে বিদ্যালয়ে আনা নেওয়া এবং শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য অভিভাবকদের দায়িত্ব অনেক বেশি। নিশ্চয় তারা তা পালন করবেন।